দশে পা
- Abhijit Chakraborty

- Apr 6, 2020
- 2 min read

দেখতে দেখতে দশে পা। শুরুর দিকের প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে সমাজ কে ভাইরাস মুক্ত করার শপথ নেওয়া বীর বাঙালি সামাজিক দূরত্ব আপন করে নিয়েছে। এই হচ্ছে আমাদের ভীষণ বড় গুণ, কিছু শেখার সুযোগ এলে সেটাকে কত তাড়াতাড়ি শিখে নিতে পারি। এই যেমন সামাজিক দূরত্ব ! কত অল্প সময়ে এই কঠিন ব্যাপারটাও আমরা সুন্দর রপ্ত করে ফেলেছি। বিশ্বাস হচ্ছে না? ওহ, ভুলেই গেছিলাম, 'বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর' ব্যাপারটা অনেকদিন আগে চুকে ফুকে গেছে। টাটকা প্রমাণ ছাড়া আমরা আমাদের দীক্ষা মন্ত্র - "মানছি না, মানবো না" থেকে নড়ছি না। দক্ষিণ কলকাতার আর একটু দক্ষিণে নতুন অভিজাত পাড়া। নতুন নতুন বাহারী কমপ্লেক্স, পুজোয় একসাথে ওঠা বসা, খাওয়া দাওয়া, নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি গুলো যেন এক বড় যৌথ পরিবারের অংশ। রান্না আদান প্রদান না হলেও, মাঝে মাঝেই বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন লেগেই থাকে। বেশ যাকে বলে - 'সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে'। ভাইরাস হানা থেকে রক্ষার্থে, হটাৎ করে সেই যৌথ পরিবারে সন্দেহের মেঘ। সন্দেহের এপিসেন্টার এক কর্তব্যপরায়ণ ডাক্তার কে ঘিরে। ডাক্তারবাবুর বাড়িতে স্ত্রী ও একটি ছোট মেয়েও আছে, কিন্তু উনি ডাক্তার হবার সময় নেওয়া শপথ কে ভুলতে না পেরে, রোজ সকালে হসপিটালে যাচ্ছেন ওনার রুগীদের কে সুস্থ করে তোলার দায়ে। রাত বিরেতে যৌথ পরিবারের যে কোনো কারুর সমস্যায় ছুটে যাওয়া ডাক্তার বাবু আজকে গণশক্র। সমাজ শুদ্ধিকরণ হোক। ডাক্তার থেকে দূরে থাকো, ইট - পাটকেল ছুড়ে নিজেকে বাঁচাও। নিজেকে বিপদের থেকে আগলে রাখা ই আশু কর্তব্য - ওই যে একটা কথা আছে, আপনি বাঁচলে বাপের নাম। ঘন্টা বাজিয়ে উদ্বোধন হওয়া সামাজিক দূরত্বের শিক্ষায় সমাজ আজ শিক্ষিত। ডোডো পাখি বিশ্বাস করেছিল মানুষ কে, ডাক্তার বিশ্বাস করেছিল যৌথ পরিবারকে। বাকিটা ভবিতব্য। আলো নিবিয়ে মোমবাতির আলোতে , লোকচক্ষুর আড়ালে নিজেদের মনের অন্ধকারকে স্বীকার করার সুযোগ বারেবারে আসবে না। শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকুক, মানসিক দূরত্ব নয়। জীবন সুন্দর, পৃথিবী সুন্দর, মানুষ সুন্দর - এই বিশ্বাস বজায় থাকুক।




Comments