top of page

আড্ডা শ্রী

  • Writer: Abhijit Chakraborty
    Abhijit Chakraborty
  • Jul 1, 2023
  • 6 min read

সকাল সকাল মিটিং। বছর শেষের টার্গেট রিভিউ হবে। চিত্রগুপ্তের। সারাবছর কি রকম পারফর্ম করলো, মর্ত্য থেকে ঠিকঠাক ইনফরমেশন নিয়ে প্রত্যেক মানুষের সঠিক মূল্যায়ন হলো কি না সেটা নিয়ে যমরাজের কোনো চিন্তা নেই , শুধু নম্বরের লক্ষ্য পূরণ হলো কিনা, সেটাই মূল আলোচ্য।


-"কিহে চিত্রগুপ্ত, সব ঠিক আছে তো?'

-"হ্যাঁ, স্যার। কোনো চিন্তা নেই।'

-"কি বলছো চিন্তা নেই! আজ পাঁচ তারিখ হয়ে গেল মার্চের। আমরা তো গত বছরের ধারেকাছেও নেই।'

-"যমরাজ, আপনারাও তো দেখছি মানুষের থেকে আলাদা নন। এত লোভ কেন?'

-"আহা, এটা লোভের ব্যাপার নয়। বছর শেষে তুমিও তো আবার বোনাস চাইবে।'

-"সেটা কি স্বাভাবিক নয়?'

-"গত দু-তিন বছর করোনার বাজারে যে হারে তোমাকে কাজ করতে হয়েছে তারজন্য তোমার বোনাস প্রাপ্য। কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু, সেই তুলনায় এইবছর তো তোমাকে কিছুই কাজ করতে হলো না। তাই নম্বরটা ঠিক না করলে বোনাস টাও কি করে ঠিক থাকবে বলো?'

-"যমরাজ কোয়ালিটি তে মন দিন। কোয়ান্টিটি তে না। যাদেরকে এখানে আনলে আপনাদের শ্রীবৃদ্ধি হবে তাঁদেরকে আনুন।'

-"হটাৎ করে বছরের শেষে তো আর নিয়ম পাল্টানো যাবে না। তাও আমি একবার ব্রহ্মার সাথে কথা বলে জানাচ্ছি। ইন্দ্রের এই সব ব্যাপারে তো কোনো ইন্টারেস্ট নেই।'

-"আপনি একজন বিচক্ষণ মানুষ, আমি জানি আপনি ঠিক ব্রহ্মা কে বোঝাতে পারবেন। বেশ কয়েকটা লিস্ট তৈরি আছে। এদেরকে আনতে পারলে স্বর্গ গর্বিত হবে।'

-"তাহলে আর সময় নষ্ট করছো কেন?'

-"তাড়াহুড়ো তে বিপত্তি বাড়বে ! অনেক ক্যালকুলেশন করতে হয়। প্রপার ইনফরমেশন নিতে হয় মর্ত্য থেকে। ডিজিটাল হওয়া তে ইনফরমেশন পেতে যদিও বেশ কিছু সুবিধে হয়েছে, কিন্তু দুম করে কাউকে তুলে নেওয়াটা ঠিক এথিক্যাল নয়। তারপর এই করোনা ঢেউয়ের পরে কি প্রতিবাদটাই না আমাকে আর আপনাকে সামলাতে হয়েছে!'

-"সে আর ভুলি কি করে? ইন্দ্রের গান বাজনার আসরেও ঢুকে গেছে সে প্রতিবাদের মিছিল। উর্বশি, রম্ভা ভয়ে ত্রস্ত। চারিদিকে শুধু একটাই স্লোগান - মানছি না,মানবো না। শেষমেশ নারদের কূটনীতিক বুদ্ধি দিয়ে মিছিল ভাঙা হলো। মর্ত্য থেকে নিয়ে আসার আগে, যাকে নিয়ে আসা হবে তার থেকে কনসেন্ট নিতে হবে যে সে মৃত্যুবরণ করতে ইচ্ছুক । প্রতিবাদীরা সহজে কনসেন্ট দেবে না, ভয় দেখালেও। অতএব, স্বর্গে প্রতিবাদী মিছিলও কমবে, গান বাজনা তেও বাধা পড়বে না।'

-"তাহলে বুঝুন আমাদের কাজ কত বেড়ে গেছে । বোনাস-এর নিয়মের পরিবর্তন দরকার। আপনি এটা নিয়েও ব্রহ্মার সাথে কথা বলুন । ইন্দ্রদেবের ডিপার্টমেন্ট থেকে বোনাসের টাকাটা দাবী করুন।'

-"সে আমি যা কথা বলার, বলছি। তুমি তোমার নম্বরের দিকে নজর দাও। যদি সত্যি স্বর্গ আলো করা কোনো মানুষকে নিয়ে আসতে পারো তাহলে আমি দেখছি বোনাস টা কতটা কি করতে পারি! আবার মনে করিয়ে দিলাম, এটা মার্চের পাঁচ। আর মাত্র কয়েকটা দিন। কাজে মন দাও।'


মিটিং শেষ। চিত্রগুপ্ত নিজের অফিসে ফিরে এসে টেবিলের তলায় গুপ্ত ক্যাবিনেট থেকে ফাইলটা খুলে নিয়ে বসলো। গোটা ছয়েক নাম। ইন্টেল এজেন্সি থেকে পাওয়া। চিত্রগুপ্তের খাতার সম্ভাব্য নাম, যারা এলে স্বর্গে আলো জ্বলে উঠবে। নামগুলো এজেন্ট দের হাতে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করে, রোজকার কাজে ডুবে গেল চিত্রগুপ্ত।


দৃশ্যপট: মধ্য কলকাতার বেলেঘাটার পূর্বাঙনা আবাসন।


চিত্রগুপ্তের এজেন্টের হাতে কালো ফাইল। ফাইলের উপর লাল কালিতে "শান্তি চক্রবর্তী" নামটা দেখা যাচ্ছে ।মর্ত্যে আসার আগে, বেশ কয়েকবার ফাইলটা পড়ে নিতে বলেছিল চিত্রগুপ্ত । সফল চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, দায়িত্বশীল ছেলে ,স্বামী ও পিতা, প্রগতশীল মনন, সৃজনশীল, স্বপ্নদর্শী এবং সর্বোপরি বন্ধুবৎসল - ফাইলের সারসংক্ষেপ। রাত তিনটে। এজেন্ট আর টার্গেটের টাগ অফ ওয়ার।


-"স্যার, আপনি রেডি তো।'

-"আপনি কে? দেখতে পাচ্ছেন শরীরটা ভালো নেই। এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।'

-"একদম ঠিক স্যার। আপনার শরীরটা ভালো নেই,সেটা জেনেই তো আমি এসেছি। শরীরে মারণ রোগ থাবা বসিয়েছে সেটা আপনিও জানেন, আপনার পরিবারের সবাই ও জানে। আপনি কষ্ট পাচ্ছেন। সারাক্ষণ মনমরা ও বিষণ্ণতা নিয়ে বাঁচার মানুষ তো আপনি নন । সারাজীবন হুল্লোড় করে কাটিয়ে এইভাবে বেঁচে থাকতে কি আপনার ভালোলাগছে? তাই তো আপনাকে মুক্তি দিতে আমি এসেছি। আমি চিত্রগুপ্তের এজেন্ট। আপনি রাজি থাকলে আমি এখুনি আপনাকে তুলে নিয়ে যাব।'

-"আজকে তারিখ কত?'

-"সিক্সথ মার্চ স্যার।'

-"পরশু তো দোল?'

-"হ্যাঁ স্যার, দোল পূর্ণিমার দিন খুব শুভদিন। শুভ দিনে আপনি যাত্রা আরম্ভ করবেন মর্ত্যের মায়াত্যাগ করে। ব্যাপারটার মধ্যেএকটা চারুত্ব আছে।'

-" না ভাই। তুমি পরে এসো বুঝলে। দোল খেলাটা পূর্বাঙনার একটা ঐতিহ্য। আনন্দের দিন। আমি আরো একটু কষ্ট না হয় সহ্য করলাম। নাতি টার পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে বাড়িতে কিছু হলে সবার খুব অসুবিধা হবে। পরীক্ষা শেষ হোক, তারপর না হয় এসো। আমাকে এখন একটু ঘুমোতে দাও বাপু। আর তোমার ম্যানেজারকে একটু বলে দিও তোমাদের এই কনসেন্ট নেবার ট্রেনিংটা যেন একটু ভালো করে দেয়। একটা চরম নাস্তিক মানুষকে তুমি দোল পূর্ণিমার পূণ্যলাভের লোভ দেখাচ্ছিলে!'


শান্তিবাবুর রাশভারী চরিত্রের সামনে এই রাতে এজেন্টের হাতজোড় করে বিদায় নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। দিন বারো বাদে আবার একবার চেষ্টা। এবার একটু সকাল সকাল। ঘুম থেকে ওঠার ঠিক কিছু আগে। শরীর টাএখন আরো বেশি হাল্কা হয়ে এসেছে। এবার মনে হয় না খুব অসুবিধা হবে রাজী করাতে।


-"স্যার রিকু বাবুর তো পরীক্ষা শেষ। এখন কোনো অমাবস্যা পূর্ণিমাও নেই। একদম সাধারণ দিন। সকাল সকাল সবাইকে খবর দিয়ে দেওয়া যাবে। দিনে দিনে সবকাজ মিটে যাবে, কারুরকোনো অসুবিধা হবে না। এবার রাজি তো স্যার?'

-"বুঝলে ভায়া, শরীরটা আর সত্যি দিচ্ছে না। সবাই একবার করে দেখতে আসছে। ওরাও বোধহয় চাইছে আমি এই কষ্ট থেকে মুক্তিপাই।'

-"ব্যস্, তাহলে আমি সুইচটা অফ করছি।'

-"আরে ভায়া দাড়াও দাড়াও। একটা জিনিষ বলো তো। গত আড়াই বছর ধরে প্রচুর মানুষকে তো উপড়ে নিয়ে গেলে। সবাই কে ঠিকঠাক জায়গা দিতে পেরেছো? দেখো বাপু, বুড়ো বয়সে সব বন্ধুরা একসাথে থাকবো বলে অনেক কষ্ট করে এই আবাসন টা তৈরি করেছিলাম। আশির দশক। বেলেঘাটার এই জায়গা তে তখন গরু মোষ চরে বেড়াতো। বাইপাস তৈরিও হয় নি। এগারো বিঘেতে অমল, শক্তি, সমীর, অসমঞ্জস, আমরা সবাই মিলে একটাই পরিবার হয়ে উঠলাম। উপরে গিয়ে যদি দেখি আমাকে ওদেরকে ছেড়ে আলাদা থাকতে হবে, তাহলে আমি যাবো না। আগে তোমার ম্যানেজারের থেকে কনফার্মেশন নিয়ে এসো যে আমরা সববন্ধুরা একসাথে থাকতে পারবো তারপর আমি ভাববো আমি তোমার সাথে যাবো কিনা!'


এই কনফার্মেশন আনবে কার থেকে? সব তো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। একটা জায়গা খুঁজে বার করা, তারপর সেখানে সবাই কে ধরে ধরে নিয়ে আসা এতো কয়েক সপ্তাহের ব্যাপার। তারমধ্যে তো মাস শেষ । এজেন্টের মাথায় হাত। উপায় বিশ্বকর্মা, যদি কিছু ম্যাজিক করে দিতে পারে।


ভাগ্য ভালো, দিন তিনেকের মধ্যেই চিত্রগুপ্ত আর বিশ্বকর্মার বৈঠক ফলপ্রসূ। এখন আর কোনো বাধা নেই শান্তি বাবুকে নিয়ে আসার। এখন দুপুর, একবার চেষ্টা করা যাক।


-"স্যার, কনফার্মেশন নিয়ে চলে এসেছি। আপনার সব বন্ধু যারা এখানে থাকতো, শুধু তারা নন, বাকি যাঁদের সাথে আপনি তাস খেলতেন ক্যালকাটা ক্লাবে, লেক ক্লাবে যাঁদের সাথে বিভিন্ন সন্ধ্যার আড্ডার টেবিলে তুফান তুলতেন সবাই কে একসাথে একজায়গায় নিয়ে এসেছি। আত্মীয়, পরিজন কাউকে বাকি রাখি নি। সবাই আপনার আসার জন্য অপেক্ষা করছেন।'

-"বাহ্, এটা বেশ ভালো করেছো। একটা কাজের কাজ। সবাই মিলে থাকার আনন্দের থেকে বড় নেশা কিছুতে নেই এটা যে তোমরা বুঝতে পেরেছ, সেটা ভেবেই তোমার কথা আর ফেলতে পারবো না।'

-"স্যার, মাসের শেষ হতে আর পাঁচ দিন। আর্থিক বছরের শেষ মাসের গুরুত্ব তো আপনার থেকে বেশি কেউ জানবে না। আপনি একজন সফল চ্যাটার্ডঅ্যাকাউন্ট্যান্ট, আপনি তো নম্বরের গুরুত্ব আমার থেকেও বেশি জানেন। কত মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছেন এই নম্বরের খেলা দিয়ে। শহরের এদিক ওদিকে কত মানুষের শ্রদ্ধার মানুষ আপনি! কত মানুষ আপনার কাজে উপকৃত, সবাই আপনার সান্নিধ্য পেতে চায়। আমিও তো সেই দলে। আপনার ছোঁয়া পেলে আমিও একটু ধন্য হই।'

-"বুঝলে ভায়া তুমি বেশ একটা দামী কথা বলেছ। আর্থিক বছরের শেষের মাসের গুরত্ব ! আমি যাবার জন্য একদম রেডি হয়ে গেছিলাম, কিন্তু তোমার কথার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ভাবছি, একজন সত্যিকারের চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইয়ারএন্ড ক্লোজ না করে কি করে ছুটি পেতে পারে বলো? কার কি দরকার পরে! তুমি বরং নতুন আর্থিক বছরে একবার দেখা করে যাও। তবে আমার মনে হয় এর পরের বার যদি সত্যি আমাকে নিয়ে যেতে চাও, তোমার ম্যানেজারকে নিয়ে এসো। যুক্তিতে তুমি এখনও অনেক কাঁচা। অনেকটা শিখতে হবে। চাটুকারিতা দিয়ে সব ক্লায়েন্ট তো ম্যানেজ হবে না বাবা!'


এজেন্টের থেকে সব রিপোর্ট পেয়ে চিত্রগুপ্ত নিশ্চিত - ঠিক লোক কে স্পট করা হয়েছে। এর উপরেই এ-বছরের বোনাস দাড়িয়ে আছে। বছর শেষ হোক, আপত্তি নেই, একে আনতে পারলে বস্ খুশি হতে বাধ্য।


বছর শেষ। রবিবার। এপ্রিলের দ্বিতীয় দিন। এবার এজেন্টের উপর ভরসা না করে, চিত্রগুপ্ত নিজেই হাজির, পূর্বাঙনার প্রধান স্থপতির বাড়িতে। বসন্তের সন্ধ্যে নেমেছে মালতীলতার গন্ধ নিয়ে। বাড়ির মালিকের শরীর যন্ত্রণায় কাতর। একদম মাথার পাশে বসে, চিত্রগুপ্ত শান্তিবাবুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে খুব নিম্নস্বরে আলাপ শুরু করে।

-"জানি খুব কষ্ট হচ্ছে।'

-"তুমি কি আবার নতুন এজেন্ট এলে?'

-"আমার নাম চিত্রগুপ্ত। আমিও আপনার মতনই হিসেব মেলাই। মানুষের প্রতিটা ভাবনার, প্রতিটা কাজের, প্রতিটা মুহূর্তের।'

-"বেশ। এবার একটা সুন্দর সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি হবে।'

-"কি সর্বনাশ, আপনার সাথে মারপিট করবো কেন? আমি তো এসেছি আপনার সাথে গল্প করতে। আপনার যেদিন ইচ্ছে, সেদিন শুধু জানাবেন। আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আপনাকে কখনো আমি যেতে বলবো না। শুধু একটা জিনিস ভাবছিলাম, এমন সময় যাত্রাশুরু করা উচিৎ যাতে অন্যের কোনো অসুবিধা নাহয় '।

-"বুঝলাম'।


চিত্রগুপ্ত ঋজু শরীরটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে। শারীরিক যন্ত্রণাকে নিজের মধ্যে লুকিয়ে ফেলা ক্লান্ত চোখগুলো সম্ভ্রমের মাত্রা টা আরো বাড়িয়ে দিল।


-"বিকেলে এক পশলা বৃষ্টি হবার জন্য মেঘ করেছিল। আর তাতেই সন্ধ্যেটা ঠান্ডা হয়ে এসেছে। বছর শেষের খাটুনির পর আজ প্রায় অনেকেই দুপুরে বিশ্রাম নিয়েছে।'

-"হ্যাঁ ঠিকই বলেছ। এখন আমি রাজি হলে, রাত একটা দুটোর মধ্যে সব কাজ শেষ ও হয়ে যাবে। প্রচুর মানুষ আসবে, বারণ করা সত্ত্বেও। আমাকে যে ওরা খুব ভালোবাসে। ওদের এই ভালোবাসাটা ছেড়ে যেতে খুব কষ্ট।কিন্তু শরীরটা আর দিচ্ছে না ভায়া। তিনদিন পর থেকে তো আবার কলকাতাতে আইপিএল। বুম্বার ব্যস্ততা আরো বেড়ে যাবে। আজকেই ভালো সময়। তুমি ব্যবস্থা করো হে চিত্রগুপ্ত ।আমি রেডি । পুরোনো পাতার ঝরে যাওয়া দরকার, সবুজ পাতা না হলেআসবে কি করে!'


কেওড়াতলা মহাশ্মশানে অন্য রাতের থেকে ভিড়টা একটু বেশি। স্বামী, বাবা, দাদা, কাকু, জেঠু, মামা, মেসো, বন্ধু - কত সম্পর্কের ইহযোগের ইতি। জীবনের সাথে কাটানো এক ঝলমলে পার্টনারশিপের ইতি। ছেলের বন্ধুদের "ক্যাপ্টেন" মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে মাথা উঁচু করে। ক্যাপ্টেন, একটা পুরো জেনারেশনের কাছে অনুপ্রেরণা। জীবনকে চেটেপুটে উপভোগ করে প্রতিটা মুহূর্তকে সজীব করে তোলার ম্যাজিশিয়ান, হাওয়াতে ভেসে হারিয়ে যাচ্ছে তাঁর প্রিয় আত্মীয়, বন্ধুদের কাছে।


-"এখন আর কোনো কষ্ট হচ্ছে? দেখুন আপনার জন্য শ্মশানে আসা মানুষগুলো ছোট ছোট জটলাতে কতদিন বাদে প্রাণ খুলে আড্ডা দিচ্ছে। রবিবারের রাত আপনার মনের মতন বাউন্ডুলে আড্ডার রাত হয়ে উঠেছে। আপনি তো এটাই চেয়েছিলেন। ভাবছি, উপরে গিয়ে আপনাকেএকটা উপাধি দেব। আড্ডা শ্রী।'

-"আপনার দেখছি "শ্রী' রোগে ধরেছে। এটা খুব ছোঁয়াচে। মেলামেশাটা একটু ঠিকঠাক মানুষের সাথে করার চেষ্টা করুন। হা, হা, হা, হা.....।'


দরাজ গলার অট্টহাসিতে চিত্রগুপ্ত ও গলা মেলায়। অনেকদিন বাদে বেশ আড্ডা দেবার লোক পাওয়া গেছে। ধর্ম, রাজনীতি, খেলা, সিনেমা, সাহিত্য, নাটক, গান নিয়ে সময়টা বেশ কাটবে।


এই লেখাটা যখন ছাপা হচ্ছে তখনই খবরটা এল। চিত্রগুপ্ত একটা বড় বোনাস পেয়েছে। যমরাজও খুব খুশি। চিত্রগুপ্ত না থাকলেও হিসেব মেলানোর অসুবিধা হবে না। ইন্দ্র বেশ ডগমগ। সুরাপ্রেমি আর সঙ্গীত যোগের সারথি কে পেয়ে রাজসভা আলোয় উদ্ভাসিত। এর সাথে অমলদের তাসের আড্ডাতে সিক্স নো-ট্রাম বুক করে খেলা ঘনঘন হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে.....



Comments


©2020 by Hizibizi Online

bottom of page